আশীষ-উর-রহমান
এবার ৩৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে ঢাকার বৈশাখী মেলার। মেলা আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতির একটি প্রধান উপাদান। দেশজুড়েই বছরের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের মেলার আয়োজন হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে। এসব মেলা কখনো আয়োজিত হয় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের অনুষঙ্গ হিসেবে, আবার কখনো ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক বা জাতীয় জীবনের কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তবে মূল বিষয় যা-ই থাকুক, মেলায় সর্বসাধারণের বিপুল সমাগমে একটি আনন্দময় আবহের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি কৃষি বা লোক ও কারুশিল্পসামগ্রীর বিপণনেরও একটি বড় সুযোগ ঘটে। আগের দিনে বিপণনব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা এখনকার মতো উন্নত না থাকায় এসব আঞ্চলিক মেলার বড় রকমের বাণিজ্যিক গুরুত্ব ছিল। এ ছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে যাত্রা, পুতুলনাচ, সার্কাস, নাগরদোলা—এ ধরনের আয়োজন নিস্তরঙ্গ জনজীবনে একটি নির্মল বিনোদনেরও সুযোগ করে দিত।
দিনে দিনে অনেক কিছুর মতো গ্রামীণ মেলার আঙ্গিকও অধুনা বেশ পাল্টে গেছে। উন্নততর যোগাযোগব্যবস্থা, নগরায়ণের বিস্তৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার গ্রামপর্যায়ে সম্প্রসারণে মেলার অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেকটা গৌণ হয়ে পড়লেও মেলার প্রতি জনসাধারণের আবেগ ও আকর্ষণ কমেনি। বরং গ্রামের ঐতিহ্যবাহী লোকমেলাগুলোকে শহরে তুলে এনে শহুরে নতুন প্রজন্মের কাছে আপন সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের বিষয়গুলোকে পরিচিত করানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। রাজধানীতে ঋতুভিত্তিক লোক-উৎসবগুলোর পাশাপাশি বেশ সাড়ম্বরেই এ ধরনের মেলা আয়োজিত হচ্ছে।
বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের বহুমাত্রিক আয়োজনের মধ্যে বৈশাখী মেলার প্রতি নগরবাসীর রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। বছরের প্রথম দিনটিতে নানা বয়সী নারী-পুরুষ-শিশু পথে নেমে পড়ে উৎসবে শামিল হতে। সারা দিন ঘুরেফিরে তারা একসময় বৈশাখী মেলাতেও একটা চক্কর দিতে ভোলে না। এখানে ঘর-সংসারের জন্য দরকারি এমন অনেক জিনিসপত্রেরই সন্ধান মেলে, যা বছরের অন্য সময় সচরাচর হাতের কাছে পাওয়া মুশকিল। বেড়ানোর আনন্দের সঙ্গে তারা প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও সেরে নেয় মেলায়।
ঢাকায় নববর্ষের উৎসবে বৈশাখী মেলার আনুষ্ঠানিক সংযোগ ঘটেছিল ১৯৭৮ সালে। শিল্পগুরু পটুয়া কামরুল হাসান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতীয় নকশাকেন্দ্র, যা এখন বিসিকের সঙ্গে একীভূত। এই নকশাকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনাতেই নকশাকেন্দ্রের পরিচালক কামরুল হাসান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের তৈরি পণ্য ঢাকায় এনে একটি মেলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তখনকার প্রধান নকশাবিদ শিল্পী ইমদাদ হোসেন। মেলাটি হয়েছিল বাংলা একাডেমীর সঙ্গে যৌথ আয়োজনে একাডেমীর বটতলায়। সেটি ছিল তিন দিনের মেলা। কারুপণ্যের জনপ্রিয়তা ও বাজার সৃষ্টিই ছিল এর মুখ্য উদ্দেশ্য।
নকশাকেন্দ্রের নিজস্ব জায়গা না থাকায় একটি নির্দিষ্ট স্থানে মেলা করা সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে। তা সত্ত্বেও প্রতি বৈশাখেই তাঁরা এ মেলার আয়োজন করেছেন। বাংলা একাডেমীর মাঠে প্রথম বছর তিনেক মেলার আয়োজনের পর ধামনন্ডি খেলার মাঠে বহু বছর বৈশাখী মেলা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে বৈশাখী মেলা চলে গেছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে। তারপর শিশু একাডেমীর প্রাঙ্গণ, আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হয়ে আবার তিন দশক পর আবার তা ফিরে এসেছে বাংলা একাডেমী মাঠে। এই দীর্ঘ সময় ও নগর-পরিক্রমায় মেলার প্রতি নগরবাসীর আগ্রহ বেড়েছে। দেশের কারুপণ্যের জনপ্রিয়তা এবং বাজার সৃষ্টির ক্ষেত্রেও বিপুল ভূমিকা রেখেছে এ মেলা।
এ বছর বৈশাখী মেলা হবে ১০ দিন। মেলা সম্পর্কে বিসিক নকশাকেন্দ্রের প্রধান নকশাবিদ এস এম শামসুদ্দিন জানালেন, বাংলা একাডেমীর সঙ্গে যৌথ আয়োজনে এবার মেলা হচ্ছে। এতে স্টল আছে দেড় শ। জায়গার স্বল্পতার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেককে স্টল দেওয়া যায়নি। বাছাই করে যেসব কারুপণ্য সচরাচর শহরে পাওয়া যায় না, এমন পণ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বরাবরের মতোই একটা আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে, যেখানে কারুশিল্পীরা দর্শকদের সামনে তাঁদের কাজ করবেন। পাশাপাশি নাগরদোলা, পুতুলনাচ এবং প্রতি সন্ধ্যায় মেলামঞ্চে বিভিন্ন অঞ্চলের লোকশিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো থাকবেই।
দিনে দিনে অনেক কিছুর মতো গ্রামীণ মেলার আঙ্গিকও অধুনা বেশ পাল্টে গেছে। উন্নততর যোগাযোগব্যবস্থা, নগরায়ণের বিস্তৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার গ্রামপর্যায়ে সম্প্রসারণে মেলার অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেকটা গৌণ হয়ে পড়লেও মেলার প্রতি জনসাধারণের আবেগ ও আকর্ষণ কমেনি। বরং গ্রামের ঐতিহ্যবাহী লোকমেলাগুলোকে শহরে তুলে এনে শহুরে নতুন প্রজন্মের কাছে আপন সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের বিষয়গুলোকে পরিচিত করানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। রাজধানীতে ঋতুভিত্তিক লোক-উৎসবগুলোর পাশাপাশি বেশ সাড়ম্বরেই এ ধরনের মেলা আয়োজিত হচ্ছে।
বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের বহুমাত্রিক আয়োজনের মধ্যে বৈশাখী মেলার প্রতি নগরবাসীর রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। বছরের প্রথম দিনটিতে নানা বয়সী নারী-পুরুষ-শিশু পথে নেমে পড়ে উৎসবে শামিল হতে। সারা দিন ঘুরেফিরে তারা একসময় বৈশাখী মেলাতেও একটা চক্কর দিতে ভোলে না। এখানে ঘর-সংসারের জন্য দরকারি এমন অনেক জিনিসপত্রেরই সন্ধান মেলে, যা বছরের অন্য সময় সচরাচর হাতের কাছে পাওয়া মুশকিল। বেড়ানোর আনন্দের সঙ্গে তারা প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও সেরে নেয় মেলায়।
ঢাকায় নববর্ষের উৎসবে বৈশাখী মেলার আনুষ্ঠানিক সংযোগ ঘটেছিল ১৯৭৮ সালে। শিল্পগুরু পটুয়া কামরুল হাসান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতীয় নকশাকেন্দ্র, যা এখন বিসিকের সঙ্গে একীভূত। এই নকশাকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনাতেই নকশাকেন্দ্রের পরিচালক কামরুল হাসান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের তৈরি পণ্য ঢাকায় এনে একটি মেলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তখনকার প্রধান নকশাবিদ শিল্পী ইমদাদ হোসেন। মেলাটি হয়েছিল বাংলা একাডেমীর সঙ্গে যৌথ আয়োজনে একাডেমীর বটতলায়। সেটি ছিল তিন দিনের মেলা। কারুপণ্যের জনপ্রিয়তা ও বাজার সৃষ্টিই ছিল এর মুখ্য উদ্দেশ্য।
নকশাকেন্দ্রের নিজস্ব জায়গা না থাকায় একটি নির্দিষ্ট স্থানে মেলা করা সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে। তা সত্ত্বেও প্রতি বৈশাখেই তাঁরা এ মেলার আয়োজন করেছেন। বাংলা একাডেমীর মাঠে প্রথম বছর তিনেক মেলার আয়োজনের পর ধামনন্ডি খেলার মাঠে বহু বছর বৈশাখী মেলা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে বৈশাখী মেলা চলে গেছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে। তারপর শিশু একাডেমীর প্রাঙ্গণ, আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হয়ে আবার তিন দশক পর আবার তা ফিরে এসেছে বাংলা একাডেমী মাঠে। এই দীর্ঘ সময় ও নগর-পরিক্রমায় মেলার প্রতি নগরবাসীর আগ্রহ বেড়েছে। দেশের কারুপণ্যের জনপ্রিয়তা এবং বাজার সৃষ্টির ক্ষেত্রেও বিপুল ভূমিকা রেখেছে এ মেলা।
এ বছর বৈশাখী মেলা হবে ১০ দিন। মেলা সম্পর্কে বিসিক নকশাকেন্দ্রের প্রধান নকশাবিদ এস এম শামসুদ্দিন জানালেন, বাংলা একাডেমীর সঙ্গে যৌথ আয়োজনে এবার মেলা হচ্ছে। এতে স্টল আছে দেড় শ। জায়গার স্বল্পতার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেককে স্টল দেওয়া যায়নি। বাছাই করে যেসব কারুপণ্য সচরাচর শহরে পাওয়া যায় না, এমন পণ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বরাবরের মতোই একটা আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে, যেখানে কারুশিল্পীরা দর্শকদের সামনে তাঁদের কাজ করবেন। পাশাপাশি নাগরদোলা, পুতুলনাচ এবং প্রতি সন্ধ্যায় মেলামঞ্চে বিভিন্ন অঞ্চলের লোকশিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো থাকবেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন